fbpx
Search

ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার আগে অবশ্যই মনে রাখবেন

Facebook
Twitter
LinkedIn
Email
WhatsApp
Print
ডোমেইন

ব্যবসায়িক বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ওয়েবসাইট তৈরী করতে হয়। আর ওয়েবসাইট তৈরী করতে হলে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে হবে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সকল দেশে হাজার হাজার ডোমেইন এবং হোস্টিং প্রভাইডার কোম্পানী আছে যারা মাসিক বা বাৎসরিক টাকার বিনিময়ে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং সার্ভিস দিয়ে থাকে। এত্তো প্রভাইডারের মেধ্যে সবাই সমান ভালো সাভিস প্রদান করে না। কারো হোস্টিং ভালো তো কাস্টোমার সার্ভিস খারাপ। আবার কারো কাস্টোমার সার্ভিস ভালো তো হোস্টিং খারাপ। আবার কারো হোস্টিং এবং কাস্টমার সার্ভিস দুটোই খারাপ। তাই হুট করে কারো কাছ থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার আগে আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।

ডোমেইন কেনার আগে যা যা খেয়াল রাখতে হবে:

১) কোন ধরনের ওয়েবসাইট করতে চাচ্ছেন সেটা আগে ভালোকরে পরিস্কার করে প্লান করবেন এবং ডোমেইন নেম কি নিবেন সেটা নিয়ে ভালো করে চিন্তা করবেন।

২) সাধারনত ব্যবসা বা ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটের জন্য .কম ডোমেইন ই ভালো। তবে অপনার নেটওয়ার্কিং বিজনেস হলে .নেট নিতে পারেন। আবার আপনার প্রতিষ্ঠান নন-প্রফিটেবল হলে .অরগ নিতে পারেন।

৩) ডোমেইনটি যত ছোট করা যায় চেষ্টা করতে হবে। এতে আপনার ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটের ঠিকানা খুব সহজে মনে রাখতে পারবেন। সুন্দর ওয়েবসাইট নেম একটি ভালো সম্পদ।

৪) ডোমেইন নেম ইউনিক নেয়ার চেস্টা করতে হবে যেন অন্য বড় কোন ব্রান্ডের সাথে গুলিয়ে না যায়।

ডোমেইন কোথা থেকে রেজিস্ট্রেশন করবেন:

১) বাংলাদেশি প্রভাইডারের কাছ থেকে ডোমেইন নেয়া ভালো, কারন আপনি বিদেশি কোম্পানীর চেয়ে ভালো সার্ভিস পাবেন এরকম অনেক প্রতিষ্ঠানই এখন বাংলাদেশে আছে। তাছাড়া বিদেশি কোম্পানীর কাছে ডোমেইন নিতে আপনাকে ডলারে পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে। যেখানে বাংলাদেশি প্রভাইডারের কাছ থেকে নিলে আপনি টাকায় পেমেন্ট করতে পারবেন।

২) ডোমেইনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি এবং বিদেশী কোম্পনীর কোন ডিফারেন্স নেই। বিদেশী কোম্পানী আপনাকে যেখান থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিবে, বালাদেশী কোম্পানী সেখান থেকেই রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিবে।

৩) বাংলাদেশী প্রভাইডারের কাছে ডোমেইন নিলে একটি কথা তাকে আগে জিজ্ঞাসা করতে হবে, সে কি আপনাকে ডোমেইনের ফুল কন্ট্রোল প্যনেল দিবে? ফুল কন্ট্রোল প্যানেল না দিলে আপনি তার কাছ থেকে ডোমেইন কিনবেন না।

৪) ডোমেইনটা হোস্টিং এর সাথে রিলেটেড। তাই হোস্টিং যে কোম্পানী থেকে নিবেন, সেখান থেকেই ডোমেইন নেয়া বেটার। তাতে আপনি ডোমেইন এবং হোস্টিং সার্ভিস একই সাথে পাবেন।

৫) লোভনীয় অফারে ডোমেইন কিনতে হলে আগে ভালে করে অফার সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা নিন।

৬) সাধারনত একটি ডোমেইনের মূল্য ৮০০-১২০০ টাকা হয়ে থাকে। এই প্রাইসের নিচে আপনাকে কেউ ডোমেইন অফার করলে আগে ভালো করে জিজ্ঞাসা করুন তার কি কি কন্ডিশন আছে।

হোস্টিং কেনার আগে যে সকল বিষয় বিবেচনা করতে হবে:

ডোমেইন ক্রয় করার পর আপনাকে অবশ্যই হোস্টিং ক্রয় করতে হবে। হোস্টিং ছাড়া আপনি শুধু ডোমেইন দিয়ে একটি ওয়েবসাইট লাইভ করতে পারবেন না। ডোমেইন সার্ভিস সকল কোম্পানী প্রায় একই রকম দিয়ে থাকে। কিন্তু প্রায় বেশিরভাগ কোম্পানীর হোস্টিং বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন মানের। তাই হোস্টিং কেনার আগে আপনাকে নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।

১) বাজেট: ওয়েবসাইট করার আগে সবারই ডোমেইন হোস্টিং এর পেছনে একটা বাজেট করতে হয়। এই সময়ে হোস্টিং এর পেছনে ভালো বাজেট করবেন। আপনি কোন ধরনের সাইট করবেন। সাইটে ডেইলি ভিজিটর সংখ্যা কেমন থাকবে এটার উপর হোস্টিং বাজেট ঠিক করতে হবে। বাজেট ঠিক করার পর, সেইম বাজেটে আপনাকে ভালো মানের হোস্টিং যে কোম্পানী প্রভাইড করবে তার কাছ থেকে নিবেন।

২) হোস্টিং স্পেস: আপনার ওয়েবসাইট করতে কত পরিমান স্পেস প্রয়োজন সেটা ঠিক করে সে অনুযায়ী হোসিং প্যাকেজ বা প্ল্যান ক্রয় করুন।

৩) ব্যন্ডউইথ: আপনার ওয়েবসাইটে যত পরিমান ডাটা বা ফাইল থাকবে এবং যত পরিমান ভিজিটর আসবে তার উপর ব্যন্ডউইথ খরচ হবে। পার ভিজিটর এবং পার পেইজ ভিউ অনুযায়ী ব্যন্ডউইথ খরচ হতে থাকবে। মনে করেন ১ জিবি ব্যন্ডউইথে আপনার সাইটে ১০০০ ভিজিটর আসতে পারবে । তাহলে সাইটে ভিজিটর অনুযয়ী ব্যন্ডউইথ নিতে হবে। আপনার সাইটে ১০-১০০ জিবি ব্যন্ডউইথ নিয়ে নিতে পারেন। প্রয়োজনে আনলিমিটেড ‍ও নিতে পারেন।

৪) হোস্টিং আপটাইম: হোস্টিং এর ক্ষেত্রে আপটাইম একটি খুবই গুরুত্বর্পূন বিষয়। হোস্টিং আপটাইম অনুযয়ী আপনার সাইট লাইভ থকবে। ৯৯.৯% এবং ১০০% আপটাইম দেখে আপিনি হোস্টিং নির্বাচন করবেন। অনেক কোম্পনী আপনাকে বলবে ৯৯.৯% আপটাইম। কিন্তু অপনি প্রকৃতপক্ষে সেটা পাবেন না। তাই হোস্টিং কেনার আগে আপনাকে হোস্টিং আপটাইম চেক করে নিতে হবে। এজন্য কোম্পানীর ইউজেস পলিসি পেজ দেখতে পারেন।

৫) মানি ব্যক গ্যারান্টি: হোস্টিং এর ক্ষেত্রে মানি ব্যক প্যারান্টি একটি গুরুত্ববহ বিষয়। আনেক কোম্পনীই ৩০ দিন মানি ব্যক গ্যারান্টি দিয়ে থাকে। এটা দেখে নিবেন। সাধারনত মানি ব্যক গ্যারান্টি দেয়া কোম্পানীগুলো সার্ভিস ভালো দিয়ে থাকে।

৬) হোস্টিং কোম্পানীর অবস্থা: হোস্টিং কেনার আগে তাদের প্রতিষ্ঠানের অবস্থা জানার চেস্টা করুন। তাদের কাস্টমার কেয়ারে কথা বলুন। তাদের সার্ভিস ব্যবহার করে এমন করোর ফিডব্যক নিতে পারলে ভালো হয়। তাদের সার্ভারের অবস্থান জানুন। সকল কিছু বিবেচনা করে ফাইনাল অর্ডার করুন।

৭) সাপোর্ট: হোস্টিং এর জন্য সাপোর্ট একটা গুরুত্ববহ বিষয়। আপনার হোস্টিং এ কোন প্রকার সমস্যা দেখা দিলে তাদের সাপোর্ট আপনাকে নিতে হবে। সাপোর্ট পেতে আপনাকে কয়েকদিন সময় লাগলে আপনি আপনার সাইটের লক্ষ লক্ষ ভিজিটর হারাবেন। আর আপনি রিসেলার হলে তো কথাই নাই। আপনার ক্লাইন্ট আপনাকে সমস্যা জিজ্ঞাসা করবে কিন্তু আপনি কোন উত্তর দিতে পারবেন না।

৮) হোস্টিং এর ধরন: আপনার কাজে কোন ধরনের হোস্টিং প্রয়োজন সে অনুযায়ী অর্ডার করুন। উইন্ডোজ এবং লিনাক্স হোস্টিং এর মধ্যে আপনার কোনটি দরকার জেনে নিন নেয়ার আগে।

৯) ফিচারসমূহ: হোস্টিং নেয়ার আগে তাদের প্রদানকৃত ফিচারসমূহ জেনে নিন। আপনার প্রয়োজনের সাথে মিল হলে তখন সেখান থেকে হোস্টিং ক্রয় করুন।

১০) লিমিটিশন: আপনি ছোট কোন প্যকেজ নিলে সকল লিমিটেশন আপনার প্যাকেজে উল্লেখ থাকবে। নিন্তু আনলিমিটেড প্যাকেজ নিলে আপনাকে লিমিটেশন জেনে নিতে হবে। মানে রাখবেন পৃথিবীতে সব কিছুরই একটা লিমিট আছে। আপনার কাছে আনলিমিটেড হবে সেটাই যেটার লিমিট আপনি ক্রোস করতে পাবেন না।

১১) সার্ভার লোড: শেয়াড় হোস্টিং নেয়ার আগে সার্ভার কনফিগারেশন এবং সার্ভার লোড সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। সার্ভার ওভারলোড হলে আপনার সাইট লোড হতে আনেক সময় লাগবে।

উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো খেয়াল করে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনলে আপনাকে ঠকতে হবে না। আশাকরি ভালো মানের হোস্টিং এবং ডোমেইন সার্ভিস পাবেন।